ই-পেপার বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ ডেঙ্গু পরিস্থিতি

আমার বার্তা অনলাইন:
০৩ জুলাই ২০২৫, ১১:০১

খুলনাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ফের ডেঙ্গু সংক্রমণের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। খুলনা বিভাগের একাধিক জেলা রয়েছে ডেঙ্গু সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে। এবার ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে নতুন উপসর্গও। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে দক্ষিণাঞ্চলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাম্প্রতিক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।

আইইডিসিআরের এক গবেষণা রিপোর্ট বলছে, এই বিভাগের ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলা ডেঙ্গু সংক্রমনের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। সম্প্রতি ঝিনাইদহ শহরের ২৭০টি বাড়িতে জরিপ চালিয়ে ১৬২টিতেই পাওয়া গেছে এডিস মশার লার্ভা। সেখানে ব্রুটো ইনডেক্স (বিআই) ৬০ শতাংশ, যা ‘চরম ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচিত। মাগুরার ব্রুটো ইনডেক্স ৫৫ দশমিক ৫ শতাংশ। অথচ এই দুই জেলায় এখনো নেই কোনো কার্যকর মশক নিধন কর্মসূচি। ঝুঁকিপূর্ণ জেলার তালিকায় খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাটসহ উপকূলীয় এলাকাগুলোও রয়েছে।

প্রতি বছর আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু সংক্রমণের মৌসুম ধরা হলেও এ বছর জুন-জুলাই মাসেই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। প্রতিদিনই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন নতুন নতুন রোগী। গত এক সপ্তাহে বিভাগের ১০ জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১১৭ জন। এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৫৭ জন। অনেক রোগীর শরীরে দেখা দিচ্ছে নতুন উপসর্গও।

এ বিষয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগী তানজিলা আক্তার বলেন, ‘জ্বর হওয়ার পর শরীর কাঁপতে থাকে, তারপর বমি শুরু হয়। ডাক্তাররা বলেছেন, ডেঙ্গু। আগে কখনো এমন হয়নি।’

বাগেরহাটের শরণখোলা থেকে তিনদিন আগে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন সোলাইমান মিয়া। তার বোন বলেন, ‘বড় ভাই ক্ষেত খামারে কাজ করেন, হয়তো সেখান থেকে মশার কামড়ে ডেঙ্গু হতে পারে। প্রথমে তাকে শরণখোলা উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম, জ্বর না কমায় পরীক্ষা করে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। পরে খুলনায় নিয়ে আসি।’

আরেক রোগীর স্বজন রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেই। আলাদা ব্যবস্থা না থাকলে সবার জন্যই রিস্ক।’

চিকিৎসকদের ভাষ্য, এবার ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে জ্বরের সঙ্গে ঝাঁকুনি, বমি, ও অতিরিক্ত দুর্বলতার উপসর্গ বেশি দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি বরগুনাতে ভয়াবহ আকারে ছড়িয়েছে ডেঙ্গু। এই জেলায় এমন ডেঙ্গু সংক্রমণের কারণ হিসেবে আইইডিসিআর জানিয়েছে, বরগুনায় সংরক্ষিত বৃষ্টির পানি থেকেই ভয়াবহভাবে ছড়িয়েছে ডেঙ্গু।

একই রকমভাবে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের ৭ উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ বৃষ্টির পানি ড্রাম, ডেগ, ট্যাংক বা অন্যান্য পাত্রে সংরক্ষণ করেন। এসব জায়গা সহজেই এডিস মশার প্রজননস্থলে পরিণত হচ্ছে। ফলে একই রকম ঝুঁকিতে রয়েছে খুলনা বিভাগের এসব উপজেলার মানুষ।

ঝিনাইদহ, মাগুরা, কিংবা বরগুনার মতো শঙ্কার পরিস্থিতি থাকলেও ডেঙ্গু প্রতিরোধে তেমন কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না বলে অভিযোগ নাগরিকদের। জোরদার হয়নি মশক নিধন কার্যক্রম, হাসপাতালগুলোর প্রস্তুতিও ঢিমেতালে।

এ বিষয়ে খুলনা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাড. বাবুল হাওলাদার বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার শঙ্কা থাকলেও সিটি করপোরেশনের কার্যকর পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। আগের তুলনায় আরও বেশি মশক নির্ধন কার্যক্রম জোরদার করার প্রয়োজন হলেও মনে হচ্ছে আগের থেকে আরও কমিয়ে ফেলেছে তারা। হাসপাতালগুলোর প্রস্তুতি নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘স্বয়ং সরকারি সংস্থার উদ্বেগের পরেও হাসপাতালগুলোর প্রস্তুতি সামান্য। শুধুমাত্র পরীক্ষা করার কীট থাকলেই প্রস্তুতি বলা যায় না।’

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. কাজী দিদারুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর অন্য সময়ের থেকে আগেই ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবে দেখা গেছে, এ বছর ডেঙ্গু রোগীদের মধ্যে নতুন লক্ষণও দেখা গেছে।’

ধারণা করা হচ্ছে, এটা ডেঙ্গু ওয়ান সেরোটাইপ। প্রতিটি সেরোটাইপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আলাদা আলাদা ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধুমাত্র লার্ভিসাইড স্প্রে করে পরিবর্তিত সেরোটাইপের কারণে কিন্তু সেভাবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না। এ রকম পরিস্থিতিতে আমরা বলছি যে, সমন্বিত ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রম প্রয়োজন এবং সেটা এখনই বলে জানান ড. কাজী দিদারুল ইসলাম।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডা. মো. মজিবুর রহমান জানান, প্রতিটি জেলাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার করতে এবং হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখতে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাব বলছে, গত বছর খুলনা বিভাগে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১০ হাজারের বেশি, আর প্রাণ হারিয়েছেন ৩৫ জন।

আমার বার্তা/এল/এমই

তারেক রহমানের চাচাতো ভাই সেজে প্রতারণা, হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের চাচাতো ভাই পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে বগুড়া

টাঙ্গাইলের স্কুলশিক্ষিকা লাকী আখতার আত্মহত্যার সুইসাইড নোট প্রকাশ

"তুমি চেয়েছো আমি মরে যাই, আর তুমি জগৎ সংসারে ভালো থাকো। আমি এখন পোকা মারার

বরিশালে সাবেক মেয়রসহ ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে দুদক

বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু

মুরাদনগরে মা ও ছেলে-মেয়েকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার সূত্রপাত যেভাবে

কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলায় ‘মাদক সংশ্লিষ্টতার’ অভিযোগ এনে দুই সন্তানসহ নারীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বাংলাদেশে শিগগিরই নির্বাচন-ইউনূস-রুবিওর ফোনালাপে আলোচনা

জাপানে শিক্ষাবৃত্তি ও বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান

বেবিচকে নতুন চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোস্তফার যোগদান

আদালতকে ফ্যাসিস্টমুক্ত করতে হবে: সালাহউদ্দিন আহমদ

পিআর পদ্ধতিতে গেলে দেশে বড় ধরনের বিভেদ তৈরি হবে: এ্যানি

মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের মিশন খোলার বিষয় খসড়া পর্যায়ে আছে

বসুন্ধরা চক্ষু হাসপাতালে ৩৮ জনের ছানি অপারেশন

দুই বড় বিষয়ে ঐকমত্যে রাজনৈতিক দলগুলো: আলী রীয়াজ

হিজরি সালের প্রথম মাস মহররমের ফজিলত ও আমল

ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রে বহিষ্কার ৭৩ জন, অনুপস্থিত প্রায় ১৯ হাজার

তারেক রহমানের চাচাতো ভাই সেজে প্রতারণা, হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা

টাঙ্গাইলের স্কুলশিক্ষিকা লাকী আখতার আত্মহত্যার সুইসাইড নোট প্রকাশ

বরিশালে সাবেক মেয়রসহ ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে দুদক

লোকবল নেবে এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড

মুরাদনগরে মা ও ছেলে-মেয়েকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার সূত্রপাত যেভাবে

নওগাঁ সীমান্তে বাংলাদেশি রাখালকে গুলি করে হত্যা করলো বিএসএফ

ডেঙ্গুজ্বরে আরও একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩৫৮ জন

লাইভস্ট্রিমিং নীতিতে বড় বদল আনলো ইউটিউব

নারী ফুটবল বিশ্বকাপে খেলতে বাংলাদেশের সামনে যে সমীকরণ

ব্যাটিংয়ে দুর্দশা নিয়ে যা বললেন বিসিবি সভাপতি