গত কয়েক বছর ধরে লোকসানের মুখে মেহেরপুরের পাট চাষিরা। জলাশয়ের অভাবে পাট জাগ দেয়া ও উৎপাদন খরচ তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তা পিছু ছাড়ছে না কৃষকদের। এর সঙ্গে রফতানি বাজারের অনিশ্চয়তা নতুন করে দুশ্চিন্তা যোগ করেছে ব্যবসায়ীদেরও। তবে বিগত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সার্বিক পরামর্শ দিচ্ছে জেলা পাট বিভাগ।
চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পাটের বাম্পার ফলনের আশা করছেন মেহেরপুরের চাষিরা। তবে উৎপাদন খরচ বাড়ায় সঠিক দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়ে গেছে। তাদের অভিযোগ, উৎপাদন খরচ বাড়ায় পাটের দামও কিছুটা বাড়বে। তবে কাঙ্ক্ষিত দাম না পেলে গত বছরের লোকসানই আরও বাড়বে।
এছাড়া মুক্ত জলাশয়ের অভাবে চাষিরা ডোবা-পুকুর বা বদ্ধ জলাশয়ে পাট জাগ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে আঁশের গুণগত মান নষ্ট হয়, রঙের তারতম্য দেখা দেয় এবং বাজারে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। চাষিরা বলেন, ভৈরব নদীতে পাট জাগ দেয়ার অনুমতি দেয়া হয় না। ফলে বাধ্য হয়ে মানহীন পাট উৎপাদন করতে হচ্ছে। আঁশ সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় নদীগুলো ব্যবহারের অনুমতি দেয়া প্রয়োজন।
অন্যদিকে কৃষি বিভাগের উদাসীনতায় মানসম্মত পাট উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বলেও অভিযোগ কৃষকদের। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, নদীতে পাট জাগ দিলে পানি দূষিত হয় এবং জলজ প্রাণীর ক্ষতি হয়। তাই নদীতে পাট জাগ না দিতে চাষিদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
তবে বিগত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সার্বিক পরামর্শ দিচ্ছে জেলা পাট বিভাগ। জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা আ ক ম হারুনের দাবি, উন্মুক্ত জলাশয়ে পাট জাগ দিতে কৃষকদের কোনো বাধা নেই, বরং জেল-জরিমানার ভয়ও নেই।
এদিকে, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে কাঁচা পাট রফতানি বন্ধ হওয়ায় নতুন করে শঙ্কায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, বিকল্প বাজার তৈরি করতে না পারলে বড় ধরনের লোকসানে পড়তে হবে।
উল্লেখ্য, চলতি মৌসুমে মেহেরপুরে ১৭ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।
আমার বার্তা/এল/এমই