মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় যত্রতত্র গড়ে ওঠা অবৈধ ঢালাই ও চুনা কারখানা যেন দাপটের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। নিয়মিত অভিযান ও মামলা হওয়া সত্ত্বেও এসব কারখানা বন্ধ করা যাচ্ছে না। চলতি বছরের গত আট মাসে গজারিয়ায় ২১টি অভিযান পরিচালনা করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মামলা হয়েছে ১০টি। তবে অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালতে মাধ্যমে এসব অবৈধ কারখানা গুড়িয়ে দেয়াসহ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পরপরই আবার চালু হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বালুয়াকান্দি, টেঙ্গারচর, ভবেরচর, বাউশিয়া ও গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে টিন দিয়ে ঘেরা জায়গার ভেতর অবৈধভাবে চলছে এসব চুনা তৈরির কারখানা। পাথর পুড়িয়ে চুনা তৈরি করা হলেও এর পেছনে ব্যবহার করা হচ্ছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এসব কারখানার মালিক নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি। তারা স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে দাপটের সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানিয়েছেন, শুধু চুনা কারখানাই নয়, একাধিক হাইওয়ে রেস্টুরেন্টেও অবৈধ গ্যাস সংযোগ রয়েছে। এতে বিনা টাকায় পুড়ছে দেশের খনিজ সম্পদ, লোকসানের মুখে পড়ছে তিতাস কর্তৃপক্ষ। তাই আরও কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি উঠেছে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে।
তিতাস গ্যাসের সোনারগাঁ অঞ্চলের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সুরুজিত কুমার সাহ জানান, ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উপজেলায় অবৈধ গ্যাস সংযোগে চলা চুনা কারখানার বিরুদ্ধে ২১টি অভিযান চালানো হয়েছে। এর মধ্যে ভাটেরচর নতুন রাস্তা এলাকায় একটি কারখানা ৯ বার গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বালুয়াকান্দী, ভবেরচর ও বাউশিয়ার বিভিন্ন কারখানা ৪ থেকে ৫ বার ভেঙে ফেলা হয়েছে। সর্বশেষ অভিযানে আরও দুটি কারখানা ভেঙে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রথম দিকে ভেঙে দেয়ার পর কয়েকদিনের মধ্যেই কারখানা পুনরায় চালু হতো। তবে ধারাবাহিক অভিযানের কারণে এখন মালিকরা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। এরই মধ্যে থানায় ১০টি মামলা হয়েছে। অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অভিযান অব্যাহত থাকবে। শুধু চুনা কারখানাই নয়, হাইওয়ে রেস্টুরেন্ট ও আবাসিক এলাকাও অভিযানের আওতায় থাকবে।
জনস্বার্থে ও সরকারি সম্পদ রক্ষায় তিতাস গ্যাসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অভিযান আরও কঠোরভাবে পরিচালনা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এসব কারখানা ও অবৈধ গ্যাস সংযোগকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, অবৈধ গ্যাস সংযোগ ব্যবহার করে ব্যবসা চালানোর অভিযোগে ১০টি মামলা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
আমার বার্তা/এল/এমই