ব্যাগেজ রুলসের বাইরে আনা পণ্য শুল্কায়ন না করে বিদেশি যাত্রীরা বিমানবন্দর থেকে ওই পণ্য ফেরত নিয়ে আবারও তার নিজ দেশে যেতে পারবেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে এমন আইনের প্রস্তাবনা করছে ঢাকা কাস্টমস হাউস। এ জন্য বিমানবন্দরে বসানো হবে ‘ফেরত ভল্ট’। আর এই ভল্টে যাত্রীর মালামাল রক্ষিত থাকবে। তিনি পুনরায় দেশে যাওয়ার সময় কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সেই পণ্য ফেরত পাবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ব্যাগেজ রুলসের বাইরে দেশি ও বিদেশি যে কোনও যাত্রী তাদের পণ্য কোনও প্রকার শুল্ক ছাড়াই নিয়ে আসতে পারেন। অনেক সময় রুলসের বাইরেও অনেক যাত্রী পণ্য নিয়ে আসেন। সেক্ষেত্রে বিমানবন্দরের কাস্টমস হলে তাকে মালামালের ঘোষণা দিয়ে সেই পণ্যের শুল্ক দিয়ে বের করতে হয়। তবে বিদেশি যাত্রীদের বেলায় অনেক সময় দেখা যায় তারা ব্যাগেজ রুলসের বাইরে অনেক পণ্য নিয়ে আসেন। কিন্তু রুলসের বাইরে পণ্য শুল্ক বা ট্যাক্স দিয়ে তারা সেগুলো বাইরে নিতে চান না। আবার তারা সেগুলো পরবর্তীতে নিজ দেশে যাওয়ার সময় ফেরত নিতে চান। কিন্তু কাস্টমসের এ ধরনের কোনও আইন নেই। এতে করে অনেক সময় বিড়ম্বনায় পড়তে হয় কাস্টমসের কর্মকর্তাদের। এতে করে দেশের কিছুটা সুনামও নষ্ট হয়। কাস্টমসের বর্তমান আইনে একজন বিদেশি যাত্রীকে হয় তাকে শুল্ক দিয়ে পণ্য নিতে হবে নতুবা সেই মালামাল জব্দ থাকবে। নির্দিষ্ট ২১ দিন পর সেই মালামাল নিতে না পারলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ নিলামে তুলে সেগুলো বিক্রি করে দেবে। ফেরত পাওয়ার আর সুযোগ থাকবে না। এই একই আইন দেশীয় যাত্রীরও।
সূত্র আরও জানায়, শুধু বিদেশি যাত্রীদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম পরিবর্তন করতে যাচ্ছে ঢাকা কাস্টমস হাউজ। সেই প্রস্তাবনা ইতিমধ্যে এনবিআরে পাঠানো হয়েছে। নতুন এই আইনে একজন বিদেশি যাত্রী শুল্কায়ন পণ্য শুল্ক না দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে না নিয়ে গেলেও পরবর্তীতে তারা নিজ দেশে যাওয়ার সময় সেই পণ্যগুলো নিয়ে যেতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে ওই পণ্য রাখতে কোনও প্রকার চার্জ থাকবে না — এমনটি এখনও নিশ্চিত করা হয়নি।
ঢাকা কাস্টমস হাউজের কমিশনার জাকির হোসেন বলেন, অনেক যাত্রী, বিশেষত বিদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রী না জেনে ব্যাগেজরুলের প্রাপ্যতার বাইরে পণ্য নিয়ে আসেন। তারা অধিকাংশ সময়ই শুল্ক-কর পরিশোধ করে পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করানোর বদলে ফেরার সময় তার দেশে ফেরত নিয়ে যেতে চান। আন্তর্জাতিকভাবে এ বিধানটি অনেক বিমানবন্দরেই বিদ্যমান রয়েছে। এ বিধানটি আমাদের এখানেও চালু করা জরুরি। আর এ জন্য আমরা প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফেরত ভল্ট স্থাপন করা হবে। সেখানে সব মালামাল রক্ষিত থাকবে। যারা মালামাল রাখবেন সেই সকল বিদেশি যাওয়ার সময় আমাদের বললে সেই মালামাল আমরা পুনরায় দিয়ে দেবো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি ফ্রি হওয়া উচিৎ। তবে চাইলে সরকার চার্জ নির্ধারণ করতে পারে।
এদিকে ঢাকা কাস্টম এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি খায়রুল আলম ভুঁইয়া মিঠু বলেন, দেশের সুনাম বৃদ্ধিতে এমন আইন নিঃসন্দেহে ভালো। তবে এখানে মাদকসহ অন্যান্য নিষিদ্ধ পণ্য যেন এগুলোর আওতায় না থাকে সেদিক যেন কর্তৃপক্ষ ভাবে।
আমরা চাই সবসময় আমাদের এই বিমানবন্দর শতভাগ যাত্রীবান্ধব হোক।
আমার বার্তা/জেএইচ