দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাভুক্ত (সার্ক) দেশগুলোর অংশগ্রহণে ঢাকায় চলছে চার দিনব্যাপী ‘সাউথ এশিয়া ট্রেড ফেয়ার ২০২৫’।
দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাভুক্ত (সার্ক) দেশগুলোর অংশগ্রহণে ঢাকায় চলছে চার দিনব্যাপী ‘সাউথ এশিয়া ট্রেড ফেয়ার ২০২৫’।
গত বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে চারদিনের এ মেলা, চলবে আগামী রোববার পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত এ মেলা। মেলার আয়োজন করেছে সার্ক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এসসিসিআই)। এতে সহযোগিতা করছে দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই), বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) চলছে এ আয়োজন।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যসম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছে মেলায়। এখানে রয়েছে বাংলাদেশের ১৭টি স্টল, শ্রীলংকার এক, আফগানিস্তানের পাঁচ এবং পাকিস্তানের ৭৭টি স্টল। স্টলগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে, ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল, ইলেকট্রনিকস, কসমেটিকস, জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্রযুক্তিপণ্য, হোম অ্যাপ্লায়েন্স ও কিচেনওয়্যারসহ দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ব্র্যান্ডের সব পণ্য ও সেবা। আঞ্চলিক পণ্যর বৈচিত্র্যের কারণে প্রতিদিন মেলায় ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা।
মেলায় পাকিস্তানি পণ্য ঘিরে ক্রেতাদের বাড়তি আগ্রহ দেখা গেছে। দর্শনার্থীরাও মেলা ঘুরে দেখছেন আর পছন্দের জিনিসপত্র কিনছেন। মেলায় টেক্সটাইল ও রেডিমেড গার্মেন্টস খাত, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য শিল্প, ইলেকট্রনিক সামগ্রী উৎপাদন, গৃহস্থালি যন্ত্রপাতি, রান্নাঘরের সরঞ্জাম, চামড়াজাত পণ্য, রত্ন ও জুয়েলারি, প্রসাধন সামগ্রী এবং ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল পণ্য খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এসব খাত একদিকে এ অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করছে, অন্যদিকে ভোক্তার ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করছে। বিশেষ করে টেক্সটাইল ও ফ্যাশন-লাইফস্টাইল খাত দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি করেছে বৈশ্বিক অঙ্গনে।
পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও প্রসাধনী শিল্প স্থানীয় বাজারে যেমন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে, তেমনি রফতানি বাজারেও সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে। ইলেকট্রনিকস, হোম অ্যাপ্লায়েন্স ও কিচেনওয়্যার উৎপাদন শিল্প দ্রুত বিকাশমান খাত হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে, যেখানে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বাড়াচ্ছে। অপরদিকে চামড়াজাত পণ্য ও রত্ন-জুয়েলারি খাতও আন্তর্জাতিক বাজারে উচ্চমানসম্পন্ন রফতানি পণ্যের জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়েছে। সার্বিকভাবে এসব খাত বাংলাদেশকে একটি বহুমাত্রিক শিল্প ও বাণিজ্যিক সম্ভাবনার দেশে পরিণত করছে। দেশ ভেদে পণ্য মান এবং ডিজাইনে রয়েছে সংস্কৃতির ছাপ। যেটি আকর্ষণ করছে ক্রেতাদের।
মেলায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থী তাসমিয়া বলেন, ‘ছুটির দিনে মেলায় এসে বিভিন্ন দেশের কয়েকটি স্টল ঘুরে দেখলাম। অনেক আকর্ষণীয় পণ্য এসেছে। কিছু জুয়েলারি পণ্য কিনেছি। আরো কিছু কেনার ইচ্ছা আছে।’
আয়োজকরা বলছেন, বিশ্ব বাণিজ্য দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে আঞ্চলিক বাণিজ্য এবং অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে আমাদের আরো সাংগঠনিকভাবে কাজ করতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বৈচিত্র্যময় সম্পদ ভাণ্ডার, কাঁচামাল এবং জনশক্তিসহ নানা সম্ভাবনা রয়েছে। আঞ্চলিক বাণিজ্য ও অর্থনীতিকে জোরদার করতে সার্কভুক্ত দেশগুলোর ব্যবসায়ীদের এক সূত্রে কাজ করার ওপর জোর দিচ্ছে এসসিসিআই। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক ও নাগরিকদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এ আয়োজন।
এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব মো. আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ মেলার মাধ্যমে বস্ত্র, ওষুধ, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও কৃষি, ইলেকট্রনিকসসহ বিভিন্ন খাতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সক্ষমতা এবং বাণিজ্য সম্ভাবনার প্রতিফলন ঘটবে। পাশাপাশি সার্কভুক্ত দেশগুলোর ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে।’
আমার বার্তা/এল/এমই