তরুণ রাজনীতিকদের মধ্যে মতাদর্শভিত্তিক সংলাপ এবং গণতান্ত্রিক চর্চাকে উৎসাহিত করতে ‘টলারেন্স, কম্প্রোমাইজ এন্ড দ্য আর্ট অফ ডেমোক্র্যাটিক ডিসঅ্যাগ্রিমেন্ট’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সেন্টার ফর গভার্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) জার্মানভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেডরিখ এবার্ট স্টিফটুংয়ের (এফইএস) সহযোগিতায় শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে এই কর্মশালার আয়োজন করে।
কর্মশালায় সূচনা বক্তব্য দেন সিজিএস-এর প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান। অনুষ্ঠানে সিজিএস-এর নির্বাহী পরিচালক পারভেজ করিম আব্বাসী এবং এফইএস বাংলাদেশের প্রোগ্রাম অ্যাডভাইজার সাধন কুমার দাস বক্তব্য রাখেন।
জিল্লুর রহমান বলেন, আমি তরুণদের কাছে কিছু প্রশ্ন রাখতে চাই। তরুণদের কাছে জানতে চাই আপনারা কি ফিউচার নাকি ডিজাস্টার? তরুণদের কথাবার্তায় ও আচরণে অশ্লীলতা বেড়ে গিয়েছে, কিন্তু এটি কেন হয়েছে? সম্প্রতি ডাকসু ও জাকসু নির্বাচন হল কিন্তু ফলাফলটা এমন হল কেন? এরকম নির্বাচন ফলাফল আগে হয় নি কখনো। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পর আমাদের রাজনীতিতে কি পরিবর্তন হয়েছে? জুলাই গণঅভ্যুত্থান নেতৃত্বে যারা ছিল তারা ক্ষমতায় আসার পর, তারাই কি এই অবস্থার কারণ কিনা? এন্টি এস্টাব্লিস্মেন্ট উত্থান হয়েছে এখন। বাগছাস এর মধ্যে এন্টি এস্টাব্লিসমেন্ট ছিল।
তিনি বলেন, অনেকেই বলেছে, এনসিপিকে রাজনৈতিক দলগুলো ব্যবহার করেছে। এনসিপি প্রমাণ করে দিয়েছে তাদের পায়ের তলায় মাটি নেই। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নায়ক হলো বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ ও সাধারণ জনগণ। একদিনের জন্য গণতন্ত্র নিশ্চিত হওয়া উচিত না। এটি প্রতিদিন হওয়া উচিত। তবে বাংলাদেশের বাস্তবতায় একদিনের গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে পারি, সেটি অনেক বড় কাজ হবে। এর জন্য অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা এবং এর স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা জরুরি।
পারভেজ করিম আব্বাসী বলেন, এই আয়োজনের লক্ষ্য তরুণদের মধ্যে সুষ্ঠু রাজনৈতিক আলোচনার পরিবেশ তৈরি করা। যুক্তরাষ্ট্রে একসময় বাই-পারটিসান সহযোগিতা ছিল কিন্তু কোভিডের পর থেকে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিকদের মধ্যে সেই সহযোগিতাটা আর নেই আর। ইউরোপে ঠিক একই রকম অবস্থা, সেখানে পপুলিজমের উত্থান হচ্ছে। ভারতীয় উপমহাদেশে একই অবস্থা। ২০২৪ সালে বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এর পরে আমরা রাজনৈতিক সহাবস্থান দেখতে চেয়েছিলাম যেখানে মিউচুয়াল রেস্পেক্ট থাকবে কিন্তু দুঃখজনক সেটি হয় নাই। বাংলাদেশে এখন অসহিষ্ণুতা বেড়ে গিয়েছে।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন নিয়েও অনেক সংশয় আছে। আজকের আলোচনায় টলারেন্স, কম্প্রোমাইজ এন্ড দ্য আর্ট অফ ডেমোক্র্যাটিক ডিসঅ্যাগ্রিমেন্ট কীভাবে আইডেন্টিফাই করতে পারি ও আপনাদেরকে কীভাবে আত্মস্থ করাতে পারি তার চেষ্টা করা হবে।
সাধন কুমার দাস বলেন, ২০২২ সালে এফইএস এই বিষয়ে কিছু ওয়ার্কশপ করেছে। এফইএস টলারেন্স ও কালচারাল এক্সপ্রেশন নিয়ে তরুণদের সঙ্গে কিছু ওয়ার্কশপ করেছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভবিষ্যতে তরুণদের নিয়ে আমরা আরও কিছু ওয়ার্কশপ ও অন্যান্য কাজ করব। আমি আমাদের তরুণদেরকে নিয়ে আশাবাদী।
কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-এর সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মির্জা তসলিমা সুলতানা।
আমার বার্তা/এমই