রাশিয়ার ইউক্রেন সীমান্তবর্তী দুটি আলাদা অঞ্চলে রাতারাতি দুটি সেতু ধসে পড়েছে। এতে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন এবং আরও অনেকেই আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
এই ঘটনার পেছনে ইউক্রেনের হাত রয়েছে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। রোববার (১ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, প্রথম দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ব্রিয়ান্স্ক অঞ্চলে। সেখানে চলন্ত একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের ওপর একটি সড়ক সেতু ভেঙে পড়ে। সেতুটি ধসে পড়ায় বেশ কয়েকটি ভারী ট্রাক ট্রেনের ওপর গিয়ে পড়ে, ফলে ট্রেনটির ইঞ্জিন ও কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়।
ব্রিয়ান্স্কের গভর্নর আলেকজান্ডার বোগোমাজ জানান, দুর্ঘটনায় অন্তত সাতজন মারা গেছেন এবং আরও ৪৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন শিশুও রয়েছে। রাশিয়ার মস্কো রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, “অবৈধ হস্তক্ষেপের” কারণেই সেতুটি ধসে পড়েছে।
এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর ঝেলেজনোগোর্স্ক জেলায় (কুরস্ক অঞ্চলের অংশ) আরেকটি সেতু ধসে পড়ে। ফলে সেখানে একটি লোকোমোটিভ ট্রেন লাইনচ্যুত হয় এবং আগুন ধরে যায়। এতে ট্রেনচালক আহত হন, তার পায়ে চোট লাগে বলে জানিয়েছেন ওই অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত গভর্নর আলেকজান্ডার কিনশটেইন।
তিনি জানিয়েছেন, “সেতু ধসের কারণ খুঁজে বের করা হবে। জরুরি পরিষেবাগুলো ঘটনাস্থলে কাজ করছে এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে পরিস্থিতির তদারকি করছি।”
এই দুটি দুর্ঘটনা ঘটেছে রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে ইউক্রেন সীমান্তের কাছে। তবে দুটির মধ্যে কোনও সংযোগ আছে কিনা কিংবা এর পেছনে ইউক্রেনের হাত রয়েছে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। ইউক্রেনের পক্ষ থেকেও এখন পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে, রাতের অন্ধকারে যাত্রীরা ধসে পড়া ট্রেন থেকে পরস্পরকে সাহায্য করে বেরিয়ে আসছেন। ভেঙে পড়া সেতুর নিচে ট্রেনের বগি চূর্ণবিচূর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে বলেও ছবিতে দেখা যাচ্ছে।
রাশিয়ার আঞ্চলিক পরিবহন প্রসিকিউটর অফিস জানিয়েছে, তারা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। রাশিয়ার বার্তাসংস্থা তাস জানিয়েছে, অতিরিক্ত উদ্ধারকর্মী, রেসকিউ সরঞ্জাম ও আলো ব্যবস্থার টাওয়ার দুর্ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে যাতে রাতের বেলাতেও কাজ চালানো যায়।
প্রথম দুর্ঘটনার সময় ট্রেনটি ক্লিমোভো শহর থেকে মস্কো যাচ্ছিল এবং ভিগোনিচস্কি জেলায় পৌঁছানোর পর সেতু ধসে ট্রেনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর যাত্রীদের কাছের একটি স্টেশনে সরিয়ে নেওয়া হয় এবং তাদের জন্য বিকল্প একটি ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যাতে তারা মস্কোর দিকে যাত্রা চালিয়ে যেতে পারেন। প্রথম দুর্ঘটনাটি ইউক্রেন সীমান্ত থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে ঘটেছে।
আমার বার্তা/এমই