মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকি সত্ত্বেও নিজের লক্ষ্যে অবিচল আছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ক্রেমলিনের তিন কর্মকর্তার মতে, পশ্চিমারা তার শর্ত মেনে নেওয়ার আগ পর্যন্ত রুশ বাহিনী ইউক্রেনে অগ্রসর হতে থাকবে। এমনকি, সময়ের সঙ্গে তার দাবির তালিকা বড় হতে পারে বলেও ধারণা করছেন তারা। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তারা বলেছেন, পশ্চিমা চাপ সামলানোর মতো যথেষ্ট অর্থনৈতিক ও সামরিক সক্ষমতা রাশিয়ার রয়েছে বলে বিশ্বাস করেন পুতিন।
ইউক্রেন ইস্যুতে পুতিনের নিঃশর্ত সম্মতি আদায় করতে না পেরে অধৈর্য হয়ে উঠছেন ট্রাম্প। তার রেশ ধরেই একদিকে কিয়েভের জন্য প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্রের মতো অস্ত্র পাঠাচ্ছেন আর অন্যদিকে শান্তি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার জন্য মস্কোকে ৫০ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে মস্কোর পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া না পেলে শতভাগ শুল্কারোপের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এক কর্মকর্তা বলেছেন, ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ কোনও পক্ষই গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করতে এগিয়ে এসেছে বলে পুতিন বিশ্বাস করেন না। তাই, দাবি পূরণ হওয়ার আগ পর্যন্ত থামছেন না তিনি।
পুতিনের দাবির মধ্যে রয়েছে, পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটোর পূর্বদিকে সম্প্রসারণ স্থগিতকরণ এবং ইউক্রেনের নিরপেক্ষতা, সামরিক বাহিনী সীমিতকরণ, সেখানে বসবাসকারী রুশভাষীদের নিরাপত্তা ও রুশ বাহিনীর দখলকৃত ভূমির অধিকার ছেড়ে দেওয়া।
এছাড়া, স্পষ্ট পরিকল্পনা প্রকাশ না করলেও, ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়েও বিস্তারিত আলাপ করতে পুতিন সম্মত আছেন বলে ক্রেমলিনের ঐ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বরাবরই পুতিনের দাবির বিরোধিতা করে বলেছেন, দখলকৃত এলাকায় রুশ সার্বভৌমত্ব মেনে নেবে না কিয়েভ এবং ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার কেবল তাদেরই রয়েছে।
এই প্রতিবেদন তৈরি করার জন্য জেলেনস্কির কার্যালয়ে যোগাযোগ করে সাড়া পায়নি রয়টার্স।
দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পর একাধিকবার পুতিন ও ট্রাম্পের মধ্যে ফোনালাপ হয়েছে এবং বিশেষ মার্কিন প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ মস্কো সফরেও গেছেন। এরপরও শান্তি চুক্তি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে মনে করেন না পুতিন।
ক্রেমলিনের ওই কর্মকর্তা বলেন, পুতিনের কাছে ট্রাম্পের সঙ্গে সখ্যতার গুরুত্ব রয়েছে। উইটকফের সঙ্গেও তার ফলপ্রসূ আলাপ হয়েছে। তবে, প্রেসিডেন্টের কাছে রাশিয়ার স্বার্থ সব কিছুর ঊর্ধ্বে।
এ বিষয়ে মার্কিন সরকারের অবস্থান জানতে চাওয়া হলে, ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে দায়ী করে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র অ্যানা কেলি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কেবল হানাহানি বন্ধের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। পুতিন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না হলে, তিনি নিষেধাজ্ঞা এবং শুল্কের করাল গ্রাসের মধ্যে পড়বেন।
আমার বার্তা/জেএইচ