ই-পেপার শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২

জন্মই ওদের আজন্ম পাপ

অলোক আচার্য:
১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫৮

পৃথিবীতে সব মানুষের অধিকার সমান। পৃথিবীর আলো,বাতাস ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ম অনুযায়ী সবার সমান ভোগ করার কথা। তবে মানুষের মুখের বুলি এবং কাগজে তৈরি নিয়ম তো আলাদা। আইন যেমন সবার জন্য সমানভাবে প্রয়োগ করা হয় না সেভাবেই পৃথিবীর অধিকার বঞ্চিত মানুষের সংখ্যাও কম নয়। জন্মগতভাবেই মানুষ বঞ্চনার শিকার হয়। এই পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি বৈষম্যের শিকার হয় শিশুরা। সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয় শিশুরা। কারণ শিশুরা এত জটিল মানসিকতা বোঝে না। ওরা কেবল বুঝতে পারে ভালোবাসা। কোনো শিশুর জন্ম হচ্ছে রাজদালানে,কোনো শিশুর জন্ম হচ্ছে ফুটপাতে আবার কারও জন্ম হচ্ছে ডাস্টবিনে! আমরা মুখে মুখে পাপ এবং পূন্যের কথা বলি। হিসাব রাখি। সমাজে দোষী ও নির্দোষের হিসাব কষি। শুনতে নির্মম লাগলেও তো আমাদের দেশে এটা হচ্ছে। মাঝে মধ্যেই পত্রিকার পাতায় খবর দেখা যায় ডাষ্টবিনে শিশুর কান্নার আওয়াজ। কেউ একজন নবজাতকটিকে ফেলে গেছে ডাষ্টবিনে। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে শিশুটি বেঁচে যায়, আবার ভাগ্য যদি আরও বেশি খারাপ হয় তাহলে শিশুটি শিয়াল বা কুকুরের খাবারে পরিণত হয়। এই নির্মম সংবাদও আমরা পাই। যতই মানুষ সভ্যতার উৎকর্ষতার দিকে ধাবিত হচ্ছে ততই যেন মানুষ আরও বেশি হিংস্র, আরও বেশি পশুত্ব মেনে নিচ্ছে। মানুষের মন থেকে উঠে গেছে স্রষ্টার প্রতি ভীতি, উঠে গেছে মানবিকতা অথবা মানুষ হিসেবে নিজের কাজটুকু। মানুষ পরিণত হয়েছে অমানুষে। শিশুটির পরিচয় কি হবে এই দুশ্চিন্তায় তার গর্ভধারিণী মা অথবা অন্য কেউ শিশুটিকে রাস্তায় ফেলে যায়।

এই জন্মের পাপ তো শিশুটির ছিল না। ছিল এই সমাজের। দায় রয়েছে এই রাষ্ট্রের। একটি শিশুর পরিচয় দিতে কেন এত দুর্ভোগ পোহাতে হবে? মানুষ-শুধু এই সত্যটুকু মেনে নিয়ে তাকে এই সমাজে বেঁচে থাকার সাহস কেন দিতে পারবে না এই সমাজ। শিশুটি জবাব চাইবে কার কাছে। কে শিশুটির এই পরিণতির দায় নিবে। মানবাধিকার সংগঠন সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের ২০২৪ সালের হিসাব অনুযায়ী, গত বছর সারাদেশে মোট ৯৪ জন নবজাতক উদ্ধার করা হয়েছে। সবাই মৃত। সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে সাতজন, মার্চে পাঁচজন, এপ্রিলে সর্বোচ্চ আটজন, মে মাসে ছয়জন, জুন মাসে তিনজন, জুলাই মাসে পাঁচজন, আগস্টে দুজন, সেপ্টেম্বরে সাতজন, অক্টোবর ও নভেম্বরে চারজন ও ডিসেম্¦রে ছয়জন নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের শিশু অধিকার পরিস্থিতি ২০১৭ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই বছর রাস্তা বা ডাস্টবিন বা ঝোঁপ থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের ১৭ নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। তার আগের বছর নবজাতক উদ্ধারের সংখ্যা ছিল ৯ জন। অর্থাৎ বছর বছর এই সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর থেকে এটা স্পষ্ট সমাজ আরও বেশি নষ্টের দিকে ধাবিত হচ্ছে। সমাজের মানুষের নীতিগুলো আজ মরে গেছে। এ কারণেই একটি নবজাতককে এই পৃথিবীতে পরিচয় দিতে এত কুন্ঠা বোধ করছি। যদি সেটাই হয় তাহলে জন্ম দিতে হবে কেন? যে পাপ আমরা বড়রা করছি সেই পাপ ঢাকতে একটি জীবন হত্যা করছি। অথচ এটিও একটি খুন! এর পিছনে কে রয়েছে তা যেমন আর জানা সম্ভব হচ্ছে না,তেমনি একটি খুনের দায়ে তাকে কোনো শাস্তি ভোগও করতে হচ্ছে না। চারদিকে অধঃপতনের সুর। পাপ নামক শব্দটি মূল্যহীন। ধর্ম মানুষকে সর্বদা সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন জীবন যাপনে উৎসাহিত করে।

এই ধর্ম বিরুদ্ধ কাজেও আমাদের মনে কোনো ভীতির সঞ্চার হচ্ছে না। এটি এমন একটি অপরাধ যা আইন দিয়ে ঠেকানো সম্ভব না। কারণ এই অপরাধের শিকার শিশুটি কারও কাছে বিচার চাইতে আসছে না। কিন্তু অপরাধ হচ্ছে। এটি ঠেকাতে সমাজে নৈতিকার চর্চা করতে হবে। ধর্মের মূল মর্মবাণী অন্তরে গ্রথিত করতে হবে। আমরা আধুনিকতার নামে অপরাধকে প্রশ্রয় দিতে পারি না। প্রতি বছর অসংখ্য শিশুকে ডাস্টবিনে কুড়িয়ে পাওয়া কোনো সমাজের আধুনিকতার পরিচায়ক হতেই পারে না। এটি বিপরীতে সমাজের নগ্ন চরিত্রের প্রকাশ। এভাবে সমাজ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। পাপ কাউকেই রেহাই দেয় না। অতীতে বহু সভ্যতার ধ্বংসের নমুনা রয়েছে। হয়তো তারা আমাদের চেয়েও জ্ঞানী ছিল। কিন্তু সমাজের নৈতিক অধঃপতন ঠেকাতে ব্যর্থ ছিল। ফলে এই পতন। আমাদের এই অধঃপতন রোধ করতে হবে। বিবেক জাগ্রত করতে হবে। মানুষের মূল্যবোধ আর মনুষ্যত্বের জাগরণ অত্যন্ত দরকার।

লেখক : শিক্ষক ও কলামিস্ট, পাবনা।

আমার বার্তা/জেএইচ

মোবাইল ছেড়ে বই পড়ি

বই পড়া শব্দদ্বয় দ্বারা প্রকৃতপক্ষে কয়েকটি বিষয় বোঝানো হয়। সেগুলো হলো আমাদের পাঠ্যবই যা ছাত্রাবস্থায়

রক্ত দিয়েও যে দেশের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি

শত শত মানুষের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে স্বৈরাচার মুক্ত হলো দেশ। জীবনবাজি রেখে নতুন করে

প্রকৌশল পেশায় প্রহসনের ছক: বঞ্চনার বৃত্তে বন্দি প্রকৃত ইঞ্জিনিয়ার

বর্তমানের বিশ্বে যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি হলো সেই দেশের ইঞ্জিনিয়াররা।

পরিবারতত্ত্ব ও পরিবারতন্ত্র : বিকল্প রাষ্ট্রচিন্তার সন্ধানে

রাষ্ট্রকে পরিবার হিসেবে দেখার চিন্তা মানবিক রাষ্ট্র গঠনের এক আকর্ষণীয় রূপক। গ্রীক দার্শনিক প্লেটো তাঁর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

হৃদয়ের শাস্তির প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তামিম

হামলার দিন কেন পেহেলগামে সেনা মোতায়েন ছিল না

গজারিয়ায় রাতভর দুই গ্রুপের গুলি-ককটেল বিস্ফোরণ, পরিস্থিতি থমথমে

গজারিয়ায় তিতাসের উচ্ছেদ অভিযানে ভেঙ্গে দেয়া হল চুনা কারখানা

রাজশাহী বিভাগ ও ৩ জেলায় বইছে তাপপ্রবাহ, থাকতে পারে কালও

হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার : এখন চ্যাট আরও বেশি সুরক্ষিত

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হাজতির মৃত্যু

সক্ষমতা প্রমাণে আগে স্থানীয় নির্বাচনের দাবি জামায়াত আমিরের

নারী বিষয়ক কমিশন ধর্মবিদ্বেষী নাস্তিকদের এজেন্ডা : খেলাফত মজলিস

পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে পাকিস্তান

ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা ‘সর্বাত্মক যুদ্ধে’ রূপ নিতে পারে

ভিওআইপি ব্যবসা: দেড় হাজার সিম ও যন্ত্রপাতিসহ মূলহোতা গ্রেপ্তার

আইসিসি টুর্নামেন্টেও পাকিস্তানের সঙ্গে খেলবে না ভারত

কিয়েভে রাশিয়ার জোরালো হামলায় ‘খুশি নন’ ট্রাম্প

৮০০ কর্মী-স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে ধানমন্ডিতে মশক নিধন অভিযান

পাকিস্তান-ভারতকে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ দেখাতে বলল জাতিসংঘ

ভ্যাটিকানের উদ্দেশ্যে কাতার ত্যাগ করলেন প্রধান উপদেষ্টা

ইলিয়াস কাঞ্চন ও শওকত মাহমুদের নেতৃত্বে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ

বাংলাদেশকে দেওয়া সহায়তা নিয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্টে প্রশ্ন, যা বললেন ট্যামি ব্রুস

সবজির বাজার চড়া, পেঁয়াজ-ডিমও বাড়তির তালিকায়