
মালয়েশিয়ায় ইমিগ্রেশন পুলিশের চলমান অভিযানকে পুঁজি করে সক্রিয় হয়ে উঠেছে এক ভয়ংকর প্রতারক চক্র। এই চক্রটি নিজেদের ইমিগ্রেশন অফিসার পরিচয় দিয়ে আটক বিদেশি কর্মীদের মুক্তির নাম করে নিয়োগকর্তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ রিঙ্গিত হাতিয়ে নিচ্ছে। জালিয়াতির এই কৌশল উন্মোচন করে নিয়োগকর্তাদের সর্বোচ্চ সতর্ক করেছে সেলাঙ্গর রাজ্য ইমিগ্রেশন বিভাগ।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সেলাঙ্গর ইমিগ্রেশন বিভাগের পরিচালক খাইরুল আমিনুস কামারুদ্দিন এই চক্রকে ‘মধ্যস্বত্বভোগী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি জানান, প্রতিবার এনফোর্সমেন্ট অপারেশনের পরেই এই সিন্ডিকেট সরলমনা নিয়োগকর্তাদের প্রতারিত করার সুযোগ নেয়।
জানা যায়, প্রতারকরা নিজেদের সেলাঙ্গর ইমিগ্রেশন অফিসার হিসেবে পরিচয় দিয়ে নিয়োগকর্তাদের সরাসরি ফোন করে। আটক কর্মীদের দ্রুত মুক্তি দেয়ার অজুহাতে তারা ‘টাচ এন গো’ ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে ৫ থেকে ১০ হাজার রিঙ্গিত পর্যন্ত অর্থ দাবি করে। কোনো রকম যাচাই না করেই অনেকে দ্রুত কর্মীদের ফিরিয়ে আনার আশায় এই টাকা দিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন।
খাইরুল আমিনুস আরও জানান, টাকা পাঠানোর পর নিয়োগকর্তারা যখন শাহ আলম ইমিগ্রেশন অফিসে যান, তখন দেখতে পান লেনদেনের জন্য ব্যবহৃত ফোন নম্বরটি ইতোমধ্যে বন্ধ বা অচল।
গত এক মাসে এ ধরনের প্রতারণার ঘটনা বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে সম্মিলিতভাবে প্রতারিত নিয়োগকর্তারা প্রায় ৫৭ হাজার রিঙ্গিত খুইয়েছেন। বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য প্রতারক চক্রটি তাদের প্রোফাইলে আসল ইমিগ্রেশন অফিসারের নাম ও ছবিও ব্যবহার করছে বলে জানা গেছে।
বিভাগের পরিচালক খাইরুল আমিনুস নিয়োগকর্তাদের প্রতি কঠোর পরামর্শ দিয়ে বলেন, যদি আপনাদের কোনো কর্মীকে আমাদের অপারেশন চলাকালীন আটক করা হয় তবে মুক্তির জন্য অর্থ চাওয়ার কোনো কল বা এসএমএস-কে একদম বিশ্বাস করবেন না। কোনো সন্দেহ দেখা দিলে অবিলম্বে ইমিগ্রেশন অফিসে এসে সরাসরি যাচাই করুন।
তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেন, যদি কোনো বিদেশি কর্মীকে আটক করা হয় এবং তাদের কাছে বৈধ নথি থাকে তবে নিয়োগকর্তাকে অবশ্যই আসল নথি নিয়ে সরাসরি ইমিগ্রেশন অফিসে আসতে হবে। যাচাইকরণ এবং যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই কর্মীদের মুক্তি দেয়া হবে।
এই প্রতারক চক্রের হাত থেকে বাঁচতে এবং আইন মেনে চলতে ইমিগ্রেশন বিভাগ নিয়োগকর্তাদের সতর্ক ও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
আমার বার্তা/এল/এমই

