
যেকোনো খেলার বৈশ্বিক ইভেন্টে নিজের দেশের সমর্থনে মাঠে হাজির হন কিংবদন্তি অ্যাথলেটরা। ক্রিকেট-ফুটবলে ফলাফল যাই হোক, রথী-মহারথীদের গ্যালারিতে বসে উত্তরসূরীদের সমর্থন দেওয়া যেন অলিখিত রীতি। কিন্তু এবারের নারী বিশ্বকাপে সেই সমর্থন পায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারতের কাছে হারের ফাইনালে ছিলেন না এবি ডি ভিলিয়ার্স, জ্যাক ক্যালিস কিংবা প্রোটিয়া ক্রিকেটের বড় কোনো মুখ।
বিশ্বকাপ ফাইনালের মতো মঞ্চেও কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের অনুপস্থিতিতে ক্ষুব্ধ দক্ষিণ আফ্রিকার অভিনেত্রী, লেখক ও সঞ্চালক থানজা ভুর। লরা উলভার্টের দল হতাশ হয়ে মাঠ ছাড়ার পরই তিনি নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। এক ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সেখানে কারা উপস্থিত ছিল? সাবেক ক্রিকেটার যারা এই দেশকে ভালোবাসে, পুরুষ ক্রিকেটাররা…তারা সবাই কোথায়? ওহ, এটা তাদের কাছে যথেষ্ট হাই-প্রোফাইল ইভেন্ট মনে হয়নি!’
নাবি মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে গত রোববার অনুষ্ঠিত হয়েছে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল। যেখানে স্বাগতিক মেয়েদের মাঠে বসে সমর্থন দিয়েছেন সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক রোহিত শর্মা থেকে শুরু করে কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার, শচীন টেন্ডুলকার ও ভিভিএস লক্ষ্মণরা। কিন্তু সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকান কোনো কিংবদন্তির দেখা মেলেনি। জয়-পরাজয় যাই ঘটুক, প্রোটিয়া মেয়েদের হাইভোল্টেজ ম্যাচে সমর্থন দিতে সাবেক তারকারা কেন গেলেন না সেই প্রশ্নের উত্তর মিলছে না থানজা ভুরের।
আফ্রিকান এই লেখকের প্রশ্ন, ‘আমি খুবই হতাশ যে, ক্রীড়া মন্ত্রী পর্যন্ত ফাইনালে উপস্থিত হননি। এই মেয়েরা কত কঠোর পরিশ্রম করেছে। তারা ভালো খেলছিল। কিন্তু কেমন লাগে যখন গ্যালারিতে তাদের সমর্থনে কাউকে দেখে না? তারা কি ধরেই নিয়েছিল যে আমরা হারতে যাচ্ছি? এই বার্তাই কি তারা আগেভাগেই পাঠিয়ে দিয়েছেন?’
স্বদেশি কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করলেও ভারতীয় মেয়েদের অভিনন্দন জানাতে ভোলেননি থানজা ভুর, ‘ভারত, তোমরা বিশ্বকাপ জিতেছ। স্বাভাবিকভাবেই তোমরা অভিনন্দন প্রাপ্য। তোমরা খেলায় বাঁচো, নিশ্বাস নাও…সকালের নাস্তা, দুপুর ও রাতের ভোজও হয় ক্রিকেটময়। তোমরা বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছ, তোমরা কি জানো? তোমরাই এটার প্রাপ্য।’
ভারতের কাছে ৫২ রানে হেরে স্বভাবতই হতাশায় ভেঙে পড়েছিলেন উলভার্ট-ক্যাপ-ডি ক্লার্করা। দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর এবার ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালেও তাদের শেষটা হয়েছে তিক্ততায়। ফলে প্রোটিয়া ক্রিকেটারদের চোখে বিষাদের অশ্রুই তো স্বাভাবিক। ওই সময় ভারতীয় দলের স্মৃতি মান্দানা, জেমিমাহ রদ্রিগেজ, রাধা যাদব ও টুর্নামেন্টসেরা দিপ্তী শর্মা গিয়ে তাদের সান্ত্বনা দিয়েছেন। হারের ক্ষত লাঘবের চেষ্টা করেছেন লরা উলভার্ট, ক্লো ট্রায়ন, মারিজান ক্যাপ, নাদিনে ডি ক্লার্কদের।
প্রসঙ্গত, ভারতীয় মেয়েরা এবার প্রথম কোনো বৈশ্বিক আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ফাইনালে আগে ব্যাট করতে নেমে তারা ওয়ানডে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯৮ রান সংগ্রহ করে। লক্ষ্য তাড়ায় ব্যক্তিগত সেঞ্চুরিও করেছিলেন প্রোটিয়া অধিনায়ক উলভার্ট। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি আফ্রিকান মেয়েদের। ২৪৬ রানে অলআউট হয়ে ৫২ রানের হারই তাই অবধারিত।
আমার বার্তা/জেএইচ

