রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেছেন, অমোচনীয় কালি অবশ্যই উচ্চমানের। কেউ যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভাবে ঘষাঘষি করে তাহলে তো সেটি উঠবেই।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবন কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
তিনি বলেন, রাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত আমরা আমাদের কমিটমেন্টে শতভাগ সন্তুষ্ট। আমরা বেশ কয়েকটি কেন্দ্র পরিদর্শন করলাম, শিক্ষার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট প্রদান করছে। এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো সমস্যা কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল ও সিনেট নির্বাচনে ভোটাদানে শিক্ষার্থীদের আঙুলে যে কালি দেওয়া হচ্ছে, সেটি ‘মুছে যাচ্ছে’ বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রদল। এ ছাড়া কয়েকজন শিক্ষার্থীও একই অভিযোগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটের দিকে, ভোট দেওয়ার পরপরই কয়েকজন শিক্ষার্থী ভোটকেন্দ্র থেকে বের হয়ে দাবি করেন যে তাদের আঙুলে লাগানো কালি অমোচনীয় নয়।
ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কাফী নিজের আঙুলের কালি মুছে যাওয়ার চিত্র দেখিয়ে অভিযোগ করেন, আমি হাবিবুর রহমান হলের ভোট কেন্দ্রে ভোট দিয়েছি। দেখেন কালি মুছে গেছে। পানিও দিতে হয়নি।
জিয়াউর রহমান হলের ভোটার আকিব বলেন, ভোটের সামগ্রিক পরিবেশ শান্তিপূর্ণ ও সুন্দর, তবে কালি নিয়ে উদ্বেগ আছে। ভোট ঠিকভাবে চলছে, কিন্তু ব্যবহৃত কালি অমোচনীয় হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু কালি সহজে মুছে যাচ্ছে। যার ফলে ভোট প্রক্রিয়া নিয়ে সন্দেহ তৈরি হতে পারে। আমি আশা করি নির্বাচন কমিশন বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।
রহমতুন্নেসা হলের ফাইন্যান্স বিভাগের (২০১৯–২০ সেশন) শিক্ষার্থী আশফিয়া তাবাসসুমও একই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, আমি শুধু ভোট দিতে ক্যাম্পাসে এসেছি। ভোট প্রক্রিয়া সুন্দরভাবে হয়েছে, কিন্তু বের হওয়ার পর দেখি আঙুলের কালি সহজেই মুছে যাচ্ছে। এমনটা হওয়ার কথা নয়।
সিনেট প্রার্থী মীর কাদির বলেন, আমার অনেক ভোটারই একই অভিযোগ করেছেন। নির্বাচন কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে মারাত্মক গাফিলতি করেছে। আমি আশা করি নির্বাচন কমিশন দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।
এদিকে সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় রাকসুর ভোটগ্রহণ। যা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরবর্তী ১৭ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
রাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ২৮ হাজার ৯০১ জন, যার মধ্যে ৩৯ দশমিক ১ শতাংশ নারী এবং ৬০ দশমিক ৯ শতাংশ পুরুষ। মোট ৮৬০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় রাকসুর ২৩ পদে ৩০৫ জন, সিনেটের ৫ পদে ৫৮ জন এবং ১৭টি হল সংসদের ২৫৫ পদে ৫৫৫ জন প্রার্থী লড়াই করছেন।
ভোটগ্রহণ হবে ৯টি একাডেমিক ভবনে স্থাপিত ১৭টি কেন্দ্রে। ভোট পরিচালনায় থাকবেন ২১২ জন শিক্ষক। এর মধ্যে ১৭ জন প্রিসাইডিং অফিসার এবং বাকি সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া ৯১ জন পোলিং অফিসার দায়িত্বে থাকবেন।
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয়েছে দুই হাজার পুলিশ সদস্য, ৬ প্লাটুন বিজিবি ও ১২ প্লাটুন র্যাব। সব ভোটকেন্দ্রে থাকবে সিসিটিভি নজরদারি এবং স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার করা হবে।
প্রসঙ্গত, এবার রাকসুতে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির সমর্থিতসহ মোট ১১টি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনে ২৩টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৪৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ভিপি পদে ১৮, জিএস পদে ১৩ এবং এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৬ জন। এছাড়া বাকি ২০টি পদে ২০০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আমার বার্তা/জেএইচ