
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এবং বাংলাদেশ সরকারের স্কিলস ফর ইন্ডাষ্ট্রি কমপিটিটিভনেস অ্যান্ড ইনোভেশন প্রোগ্রাম (SICIP) এর যৌথ সহযোগিতায় পোশাক শিল্পে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ, ভবিষ্যতমুখী আধুনিক কর্মশক্তি তৈরিতে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিজিএমইএ কমপ্লেক্সের নুরুল কাদের অডিটরিয়ামে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উপরোক্ত কর্মসূচির আওতায় সফলভাবে প্রশিক্ষণ সম্পন্নকারী ১১৭৫ জন প্রতিশ্রুতিশীল প্রশিক্ষণার্থীকে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক ডিগ্রিধারী এই প্রশিক্ষনার্থীরা পোশাক খাতের প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শিল্পের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষতা অর্জন করেছেন।
বিজিএমইএ সভাপতি এবং SICIP -বিজিএমইএ প্রকল্পের চেয়ারপারসন মাহমুদ হাসান খান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রশিক্ষনার্থীদের হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেন। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয়ার্ধে প্রশিক্ষার্থীদের হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেন বিজিএমইএ এর সিনিয়র সহ-সভাপতি ইনামুল হক খান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি এবং SICIP -বিজিএমইএ প্রকল্প সংক্রান্ত কমিটির সদস্য মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ এর পরিচালক এবং SICIP -বিজিএমইএ প্রকল্প সংক্রান্ত কমিটির সদস্য রুমানা রশীদ।
কি-নোট স্পিকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ এর পরিচালক এবং SICIP -বিজিএমইএ প্রকল্প কমিটির সদস্য মজুমদার আরিফুর রহমান।
আরও উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ এর পরিচালক নাফিস- উদ- দৌলা, পরিচালক কাজী মিজানুর রহমান এবং বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যানগন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন SICIP -বিজিএমইএ প্রকল্পের চিফ কোর্অর্ডিনেটর মুনীর চৌধুরী।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বিজিএমইএ সভাপতি এবং SICIP -বিজিএমইএ প্রকল্পের চেয়ারপারসন মাহমুদ হাসান খানকে সম্মাননা প্রদান করেন SICIP -বিজিএমইএ প্রকল্প সংক্রান্ত কমিটির তিন সদস্য- বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, পরিচালক মজুমদার আরিফুর রহমান এবং পরিচালক রুমানা রশীদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বিভিন্ন কারনে শিল্পে উৎপাদন ব্যয় ক্রমাগতভাবে বাড়ছে, অথচ পণ্যের মূল্য বাড়ছে না। এমতাবস্থায় বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য দক্ষতা উন্নয়ন অপরিহার্য। তিনি বলেন, বিশেষ করে পোশাক শিল্প এখন মৌলিক পোশাক উৎপাদন থেকে দৃষ্টি সরিয়ে ইন্ডাষ্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর ফোকাস করেছে। বিশেষভাবে পোশাক ডিজাইন সফটওয়্যার, থ্রিডি ডিজাইনিং সফটওয়্যার, কম্পিউটার এডেড ম্যানুফ্যাকচারিং, ডিজিটাল প্রিন্টিং প্রযুক্তির মতো ডিজাইনিং টুলগুলো বর্তমানে ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি এ ক্ষেত্রগুলোতে ব্যাপকভাবে যুক্ত হওয়ার জন্য প্রশিক্ষনার্থীদেরকে আহবান জানান।
তিনি বলেন, সফলভাবে প্রশিক্ষণ সম্পন্নকারীগন শিল্পের ভবিষ্যত কারিগর, যারা স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ এর এর নির্মাতা এবং ডিজিটাল রুপান্তরের (ট্রান্সফরমেশন) এর চেঞ্জ মেকার হিসেবে কাজ করবেন।
বিজিএমইএ এর পরিচালক মজুমদার আরিফুর রহমান মূল বক্তব্যে প্রকল্পের সামগ্রিক দিকগুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পোশাক শিল্পে মোট ১০,০০০ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্য নিয়ে SICIP, অর্থ মন্ত্রনালয়ের অর্থ বিভাগ এবং বিজিএমইএ ২০২৪ সাল থেকে একসাথে কাজ করছে। প্রকল্পটির সফল বাস্তবায়নে ২০টি ট্রেনিং সেন্টারে ১২টি কোর্স পরিচালিত হচ্ছে। তিনি বলেন, এ কর্মসূচীর অধীনে-
• সার্টিফিকেট প্রদানের হার ৮১.৪২ শতাংশ।
• প্রশিক্ষণার্থীদের অন্তত ৬৫ শতাংশের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
• এই উদ্যোগে ৫২ শতাংশ নারী অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে, যা সরকারি লক্ষ্যমাত্রার (৩০%) চেয়ে অনেক বেশি।
উল্লেখ্য যে, স্কিলস ফর ইন্ডাষ্ট্রি কমপিটিটিভনেস অ্যান্ড ইনোভেশন প্রোগ্রাম (এসআইসিআইপি) হলো বাংলাদেশ সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ, যা দেশের শিল্পখাতের দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রতিযোগিতা সক্ষমতা এবং উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে চালু করা হয়েছে।এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এর আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তায়, সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের অধীনে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) তৈরি পোশাক খাতের জন্য এই প্রকল্পের মূল অংশীদার হিসেবে কাজ করছে।
আমার বার্তা/এমই

