তানিম নূর পরিচালিত ‘উৎসব’ ছবিটি দিয়ে বিরতির পর বড় পর্দায় আসেন জাহিদ হাসান। নব্বই দশকের জনপ্রিয় এই অভিনেতা ‘উৎসব’ ছবিতে জাহাঙ্গীর চরিত্রে অভিনয় করে মানুষকে মুগ্ধতায় ভাসাচ্ছেন। প্রেক্ষাগৃহফেরত দর্শকেরা জাহিদ হাসানের অভিনয়ের মুগ্ধতার কথা জানাচ্ছেনও। এদিকে প্রেক্ষাগৃহে যখন ছবিটি প্রদর্শিত হচ্ছে, ঠিক তখন হাসপাতালের বিছানায় শয্যাশায়ী ছিলেন এই অভিনয়শিল্পী।
পবিত্র ঈদুল আজহার আগের দিন তিনি অসুস্থ হয়ে হাসাপাতালে ভর্তি হন। তবে এই সময়ে ছবির অন্য অভিনয়শিল্পীরা এক প্রেক্ষাগৃহ থেকে আরেক প্রেক্ষাগৃহে ছুটেছেন। গতকাল বুধবার ‘উৎসব’ ছবির বিশেষ প্রদর্শনীতে আসেন জাহিদ হাসান। সবার সঙ্গে ছবিটি দেখেন, একই সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নিজে কেঁদেছেন, উপস্থিত সবাইকে আবেগতাড়িত করেছেন।
পবিত্র ঈদুল আজহায় মুক্তি পাওয়া ‘উৎসব’ সিনেমায় জাহিদ হাসান ছাড়াও অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান, চঞ্চল চৌধুরী, জয়া আহসান, অপি করিম, ইন্তেখাব দিনার, নরেশ ভূঁইয়া, সৌম্য জ্যোতি, সাদিয়া আয়মান প্রমুখ। এর আগে রায়হান রাফীর ‘আমলনামা’সহ বেশ কয়েকটি কাজে দেখা গেছে জাহিদ হাসানকে।
‘উৎসব’ ছবির বিশেষ প্রদর্শনীতে জাহিদ হাসান বলেন, ‘আজকে আমার ঈদ। কারণ ঈদের আগের দিন থেকে আমি একটু অসুস্থ ছিলাম। হাসপাতালে ছিলাম। এইচডিইউ, আইসিইউ হয়ে কেবিন। আমার ছবিটি যখন মুক্তি পায়, আমি যেতে পারছিলাম না কোথাও। আমার সহযোদ্ধা ভাইবেরাদার যাঁরা, তাঁরা সবাই বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে ছুটেছেন। ছবিটির প্রতি দর্শক আগ্রহ বাড়াতে সবাই যাঁর যাঁর মতো ফাইট করে যাচ্ছিলাম। ওই সময়টায় আমি “উৎসব” ছবির অনেক রিভিউ দেখেছি। তরুণদের পাশাপাশি অনেক বয়স্ক মানুষ ছবিটি দেখতে এসেছেন। পরিবার নিয়ে ছবিটি দেখতে এসেছেন। সবার প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ। কৃতজ্ঞতায় আমার মাথায় নুয়ে আসে।’
কথা প্রসঙ্গে জাহিদ হাসান শুটিং সময়ের কথাও মনে করলেন। জানান, শুটিংয়ের সময় অনেক বিষয়ে অনেক কিছু নিয়ে ইউনিটের কাউকে কাউকে বকাঝকা করেছেন। কিন্তু এখন মনে হয়েছে এসব না করলেও হয়। জাহিদ হাসান বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে, ব্যক্তিজীবনে আমরা অনেক কিছুতে অনেক ভুল করেছি। আমরা চাই, সুন্দরভাবে ধর্মবর্ণ–নির্বিশেষে, দলমত–নির্বিশেষে সবাই বাংলাদেশে একসঙ্গে থাকব। সুখে–দুখে থাকব। উৎসব করব। পরিবার ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে আমরা সবাই যেন সব জায়গায় যেতে পারি।’
‘উৎসব’ ছবির বিশেষ প্রদর্শনীতে কথা বলার শেষ দিকে এসে জাহিদ হাসান বলেন, ‘মুশকিল হয়েছে কি, কেউ আমাকে ভালোবাসলে কান্না পেয়ে যায়। আদর করলেও কান্না পায়। যখন আপনারা (সাংবাদিকসহ উপস্থিত সবাইকে) আমাকে এভাবে আদর করেন, ভালোবাসেন, কান্না পায়। এটা মোটেও অভিনয় নয়। সত্যিই সত্যিই। অভিনয়জীবনে আমি বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছি। জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছি। কিন্তু এভাবে আমার কোনো ছবি মুক্তি পায়নি। এত ক্যামেরা কখনো আমার সামনে আসেনি। এটা আমার জীবনের জন্য অনেক বড় পাওয়া।’
আমার বার্তা/এল/এমই