যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে দুই কোটি ডলারের ক্ষতিপূরণ মামলা করেছেন মাহমুদ খালিল নামে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক শিক্ষার্থী। যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনেরও নেতা তিনি।
তার অভিযোগ, অভিবাসন এজেন্টদের হাতে বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার ও আটক হয়ে তিনি চরম মানসিক যন্ত্রণা, আর্থিক ক্ষতি এবং সম্মানহানির শিকার হয়েছেন।
শুক্রবার (১১ জুলাই) প্রেসটিভি ইরানের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩২ বছর বয়সী মাহমুদ খালিল গত বছরের গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ক্যাম্পাসে হওয়া আন্দোলনের সংগঠকদের একজন। তিনি গত ৮ মার্চ নিউইয়র্কে গ্রেপ্তার হন এবং তারপর থেকে লুইজিয়ানার একটি অভিবাসন আটক কেন্দ্রে ছিলেন। খালিল যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে বসবাসরত একজন স্থায়ী বাসিন্দা (গ্রিন কার্ডধারী)। তিনি কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি অ্যাপারথেইড ডাইভেস্ট (সিইউএডি)-এর প্রধান আলোচক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
মামলায় বলা হয়েছে, মাহমুদ খালিল ও তার পরিবারের মধ্যে ভয় ছড়িয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে তাকে বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার ও বহিষ্কারের পরিকল্পনা করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন।
এই দাবি করেছে ‘সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটস’, যেটি খালিলের আইনি সহায়তায় রয়েছে। আটকের সময় খালিল যে অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে গেছেন, তা ছিল ভয়াবহ। তিনি বলেন, ৭০ জন পুরুষের সঙ্গে একটি ডরমে থাকতে হতো তাকে; সেখানে কোনো প্রাইভেসি ছিল না, সবসময় আলো জ্বালানো থাকত।
এক বিবৃতিতে খালিল বলেন, এই মামলা হলো ন্যায়ের দিকে প্রথম পদক্ষেপ। রাজনৈতিক প্রতিশোধ এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের জন্য জবাবদিহি হওয়া দরকার। আমার জীবন থেকে ১০৪ দিন ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। আমি আমার স্ত্রীর থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলাম, আমার প্রথম সন্তানের জন্মও মিস করেছি-এগুলো কিছুই ফেরত পাওয়া সম্ভব নয়।
ট্রাম্প প্রশাসন খালিলের বিরুদ্ধে ইহুদিবিদ্বেষ বা অ্যান্টি-সেমিটিক মনোভাবের অভিযোগ তুলেছে। তবে, এসব অভিযোগের পক্ষে এখন পর্যন্ত কোনো প্রমাণ জনসমক্ষে বা আদালতের নথিতে উপস্থাপন করা হয়নি।
সমালোচকরা বলছেন, প্রশাসন আসলে এসব অভিযোগকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে ফিলিস্তিনপন্থি বক্তব্য ও আন্দোলনকে দমন করতে চাইছে।
ট্রাম্প ইতোমধ্যে এমন হুমকি দিয়েছেন, যেসব বিদেশি শিক্ষার্থী ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন, তাদের সবাইকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা হবে। এই নীতির আওতায়ই খালিলকে লক্ষ্যবস্তু করা হয় বলে অভিযোগ।
ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করছে, এসব শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি ‘বৈরী’ অবস্থান নিয়েছে। যদিও শিক্ষার্থীরা এসব অভিযোগ জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের পদক্ষেপ মার্কিন সংবিধানের প্রথম সংশোধনী অনুযায়ী মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থি।
আমার বার্তা/জেএইচ