
শিক্ষকের ক্রমাগত অপমান এবং বহিষ্কারের ভয় দেখানোর কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হয়েছে একজন ছাত্রের। তবে নিজের অঙ্গ মানুষের সেবায় দান করতে লিখে গেছেন সুইসাইড নোট। মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে লেখা এ চিরকুটে উল্লেখ আছে মানসিক অত্যাচার করা ওই তিনজন শিক্ষকের নামও।
এমন হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের দিল্লিতে। ১৬ বছর বয়সি ওই ছাত্র দিল্লির একটি শীর্ষস্থানীয় স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ছিলেন। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দিল্লির রাজেন্দ্র প্লেস মেট্রো স্টেশন থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন ওই শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, ওই সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে প্রতিদিনের মতো স্কুলে যাওয়ার পর দুপুর আড়াইটার দিকে ছাত্রের বাবার কাছে ফোন আসে যে তার ছেলে মেট্রো স্টেশনের কাছে আহত অবস্থায় পড়ে আছে। বাবার অনুরোধে পথচারীরা তাকে ব্লি কাপুর হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে পরিবার পৌঁছানোর আগেই চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার এফআইআরে ছাত্রের বাবা অভিযোগ করেন, গত চার দিন ধরে এক শিক্ষক তাকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছিলেন এবং ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দেওয়া হবে বলে ভয় দেখাচ্ছিলেন। বন্ধুদের কাছ থেকেও তিনি এসবই শুনেছেন বলে জানান।
এরপর ওই দিন স্কুলের ড্রামাটিকস ক্লাসে পড়ে যাওয়ার পর শিক্ষক তাকে ‘ওভার অ্যাক্টিং’ করার অভিযোগ তুলে অপমান করেন। এতটাই বকাঝকা করা হয় যে তিনি কাঁদতে শুরু করেন। কিন্তু শিক্ষক তাকে উপহাস করে বলেন, ‘কাঁদতে থাক, আমার কিছু যায় আসে না।’ওই সময় প্রিন্সিপাল ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। এর আগে আরেক শিক্ষক একসময় তাকে ধাক্কা দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ।
ছাত্রের বাবা জানিয়েছেন, এর আগেও ছেলে মানসিক নির্যাতনের কথা জানিয়েছিল এবং পরিবার স্কুল প্রশাসনের কাছে অভিযোগও করেছিল। তবে কোনো ফল হয়নি। শিগগিরই দশম শ্রেণির পরীক্ষা থাকায় পরিবার শক্ত পদক্ষেপ নেয়নি।
ছাত্রের ব্যাগ থেকে উদ্ধার হওয়া চিরকুটে লেখা ছিল-মা, বহুবার তোমার মন ভেঙেছি, এবার শেষবারের মতো ভাঙছি। স্কুলের শিক্ষকেরা এমনই, আর কী বলব। মৃত্যুর পর যদি শরীরের কোনো অঙ্গ কার্যকর অবস্থায় থাকে তা যেন দান করে দেওয়া হয়। যাতে অন্য কোনো শিক্ষার্থী এমন পরিস্থিতিতে আত্মহত্যা করতে বাধ্য না হয় সেজন্য প্রিন্সিপাল ও দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছেন।
আমার বার্তা/এল/এমই

