
থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে ফের সংঘাত শুরু হয়েছে। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) কম্বোডিয়ার ভেতর লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালিয়েছে থাই সামরিক বাহিনী। এর ফলে ঝুঁকিতে পড়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া শান্তিচুক্তি। তার সহায়তায় মাত্র দুই মাস আগে সমঝোতা করেছিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দুই প্রতিবেশী দেশ।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, সোমবার ভোর থেকে সীমান্তজুড়ে গুলিবিনিময় ও বিস্ফোরণের ঘটনা বাড়তে থাকায় উভয় দেশই অপর পক্ষকে আক্রমণ শুরুর অভিযোগ করেছে। দীর্ঘ কয়েক সপ্তাহের উত্তেজনা এবং থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে সমঝোতা বাস্তবায়ন স্থগিতের পর পরিস্থিতি ফের ভয়াবহ রূপ নেয়।
থাই সেনাবাহিনী জানায়, কম্বোডিয়ার সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়েছে মূলত প্রতিশোধ হিসেবে। স্থানীয় সময় সোমবার সকালে এক হামলায় এক থাই সেনা নিহত ও দুই জন আহত হওয়ার পর পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে থাইল্যান্ড।
থাইল্যান্ডের মেজর জেনারেল উইন্থাই সুবারি বলেন, ‘চং আন মা পাস এলাকায় কম্বোডিয়ার অস্ত্র-সমর্থনকারী অবস্থানগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। ওখান থেকে আর্টিলারি ও মর্টার ছুড়ে আনুপং ঘাঁটিতে হামলা করা হয়েছিল, যার ফলে আমাদের একজন সেনা মারা যান ও দু’জন আহত হন।’
থাই সেনাবাহিনীর দাবি, সোমবার ভোর ৩টার দিকে কম্বোডিয়ার বাহিনী সীমান্তে গোলাবর্ষণ শুরু করে। অন্যদিকে কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনী জানায়, স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ৪ মিনিটে থাই বাহিনী তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তাদের অভিযোগ, ‘অনেক দিন ধরে থাই বাহিনী নানা ধরনের উসকানিমূলক আচরণ করছিল।’
সংঘাত বেড়ে যাওয়ায় সীমান্তবর্তী থাই শহরগুলো থেকে প্রায় ৭০ শতাংশ বেসামরিক নাগরিককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সরানোর সময় আগে-থেকে থাকা শারীরিক জটিলতায় একজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানিয়েছে থাই কর্তৃপক্ষ।
এর আগে, গত জুলাই মাসে দুই দেশের মধ্যে পাঁচ দিনের সীমান্তযুদ্ধ হয়েছিল। এতে বহু মানুষ প্রাণ হারায় এবং দুই লাখের মতো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। পরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দুই দেশের নেতাদের সঙ্গে ফোনালাপের মাধ্যমে ২৮ জুলাই প্রাথমিক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করান।
অক্টোবরের শেষ দিকে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে ট্রাম্প ও মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের উপস্থিতিতে সম্প্রসারিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করে থাইল্যান্ড ও কাম্বোডিয়া। ওই মুহূর্তকে ট্রাম্প তার বড় কূটনৈতিক সাফল্য বলে দাবি করেছিলেন।
তবে স্বাক্ষরের দুই সপ্তাহের মধ্যেই সমঝোতা ভেঙে পড়তে শুরু করে। সীমান্তে একটি ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে কয়েকজন থাই সেনা আহত হওয়ার পর চুক্তির অগ্রগতি থামিয়ে দেয় ব্যাংকক।
আমার বার্তা/এমই

