নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিতে দেশজুড়ে ফাইবার নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। দেয়া হচ্ছে নতুন এনটিটিএন লাইসেন্স। এরই মধ্যে আবেদন করেছে, বাংলালিংকের মূল প্রতিষ্ঠান ভিওন। তালিকায় আরও আছে বাংলাফোনসহ চার প্রতিষ্ঠান। তবে যাচাই-বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে বাংলাফোন। প্রতিষ্ঠানটিকে লাইসেন্স দিতে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চেয়েছে বিটিআরসি।
ফাইবার নেটওয়ার্কের বড় উদ্যোগ, এনটিটিএন লাইসেন্স পাচ্ছে
মোবাইল অপারেটরদের তথ্যমতে, ফোরজি ইন্টারনেট সেবা দিতে প্রতিটি টাওয়ারে সেকেন্ডে ২০০ থেকে ৪৫০ এমবিপিএস পর্যন্ত ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করতে হয়। ফাইভজিতে যা দাঁড়াবে এক থেকে চার জিবিপিএস পর্যন্ত। এই ব্যান্ডউইথ সঞ্চালনে ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ টাওয়ারে দরকার ফাইবার সংযোগ।
বর্তমানে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এবং ছয় এনটিটিএন অপারেটর মিলিয়ে দেশজুড়ে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৪১৭ কিলোমিটার ফাইবার নেটওয়ার্ক রয়েছে। যার বড় অংশই ঝুলন্ত। উচ্চ খরচ আর ঝুলন্ত তারের কারণে ৪৬ হাজার মোবাইল টাওয়ারের মধ্যে ফাইবারে যুক্ত মাত্র ৩০ শতাংশ।
এ পরিস্থিতিতে শক্তিশালী ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক তৈরিতে জোর দিচ্ছে বিটিআরসি। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) এমদাদ উল বারী বলেন, এখানে যত বিনিয়োগ দরকার ছিল, সেরকম বিনিয়োগ এতদিন আসেনি। ফলে এখনও প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে ফাইবার অপটিকস পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। বর্তমানে এখানে জোর দেয়া হচ্ছে।
এরই অংশ হিসেবে ফাইবার নেটওয়ার্ক তৈরি করতে এনটিটিএন লাইসেন্স চেয়েছে বাংলালিংকের মূল প্রতিষ্ঠান ভিওনসহ পাঁচ প্রতিষ্ঠান। বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, এনটিটিএনসহ অন্যান্য সেবার লাইসেন্সগুলো নিয়ে খরচ কমিয়ে কীভাবে গ্রাহকদের সেবার মান বাড়ানো যায়, সে লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে।
নথিপত্রে দেখা যায়, পাঁচ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বাংলাফোনকে লাইসেন্স দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিটিআরসি। অপেক্ষা শুধু টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের। এনটিটিএন গাইডলাইন অনুযায়ী যোগ্য না হলেও, বিবেচনায় রাখা হয়েছে 'ভিওন'কে। বিসিসি'র আবেদন আছে অধিকতর পর্যালোচনার তালিকায়। 'আইএসপি' লাইসেন্স থাকায় বিবেচনা করা হয়নি ম্যাঙ্গোর আবেদন।
লাইসেন্স দেয়ার আগে বাজার সক্ষমতা যাচাই করার আহ্বান বৃহৎ প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাট হোমের। প্রতিষ্ঠানটির চিফ গভর্নমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার আব্বাস ফারুক বলেন, বাংলাদেশের মতো ছোট দেশে এতগুলো প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই।
উল্লেখ্য, বর্তমানে মোবাইলের ১৮ কোটির বেশি গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে চার অপারেটর।
আমার বার্তা/এল/এমই