
রাজধানীর মিরপুর হাউজিং স্টাফ কোয়ার্টারের ২১টি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় পরিত্যক্ত ও বসবাসের অযোগ্য ঘোষণা করে মাত্র দুই দিনের নোটিশে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সরজমিনে পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নের চেষ্টা চালানোর ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে স্টাফ কোয়ার্টার কর্মচারী কল্যাণ সমিতি।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে প্রতিবাদ জানান সমিতির নেতারা।
সমিতির পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্যে সহ সভাপতি আবু জাফর বলেন, ‘এই প্রকল্পের আওতায় মোট ৩৬টি ভবন রয়েছে। এর মধ্যে প্রতিরক্ষা বিভাগের কাছে ১৫টি ভবন এবং একটি ভবন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা বিভাগ তাদের অধীনস্থ সংস্থা এমইএস এর মাধ্যমে ভবনগুলোকে ৪ তলা থেকে ৫ তলায় উন্নীত করে বসবাস করছে৷
এ ছাড়া একটি ভবন মিরপুর-১ নম্বরে অবস্থিত, গৃহসংস্থান বিভাগের নিজস্ব কর্মচারীদের ‘স্টাফ কোয়ার্টার’ হিসেবে রাখা হয়েছে। বাকি ২১টি ভবন গত ৩০ নভেম্বর পরিত্যক্ত ও বসবাসের অযোগ্য ঘোষণা করে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ।’
তিনি বলেন, ‘সাইনবোর্ড ঝোলানোর মাত্র দুইদিন পর আমাদের ন্যায্য ও প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে ৩ ডিসেম্বর গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য (ভূমিসম্পদ) এবং গৃহায়ন বিভাগ-২ থেকে সদলবলে সরেজমিনে পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা চালানো হয়। এই ধরনের ঘটনা মানবতা বিরোধী, অযৌক্তিক, অবৈধ ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যা দেশের আইনের পরিপন্থি।'
সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ রুহুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, ঢাকা শহরের জনসাধারণের মধ্যে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী কমপক্ষে ২ বা ৩ মাসের সময় ভাড়াটিয়াকে বাসা ছাড়তে বলা হয়। কিন্তু গণপূর্ত সচিবের নির্দেশে আমাদের মাত্র ২ দিনের নোটিশে বাসা ছাড়তে বলা হয়। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সম্পূর্ণভাবে আইনের পরিপন্থী।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বলেন, মিরপুর-১৪ নম্বরে অবস্থিত হাউজিং স্টাফ কোয়ার্টারের মোট ২১টি ভবনের ৫৭৬টি ফ্ল্যাট বর্তমান বরাদ্দারীদের নিকট বিক্রয় বা স্থায়ী বন্দোবস্তের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ঝুঁকিপূর্ণের কথা বলে আমাদের এই ফ্ল্যাটগুলো থেকে বের করে দিতে পারলে এটি হাউজিং কর্তৃপক্ষের জন্য লাভজনক হবে। তাই উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে আমাদের এই ফ্ল্যাটগুলো থেকে বের করে দেওয়ার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
তারা বলেন, আমাদের বরাদ্ধধারী ভবন যদি ঝুঁকিপূর্ণই হবে, তাহলে সেটি ইঞ্জিনিয়ার নিয়ে এসে পরীক্ষা ছাড়া কীভাবে নির্ণয় করা হলো? যদি আমাদের ভবন ঝুঁকিপূর্ণই হয়, তাহলে ১৭টি ভবনও তো ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কথা। কিন্তু, কেবল আমাদের ২১টি ভবনে সাইনবোর্ড দেওয়া হলো কেন?
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, সমিতির সদস্যরা এই ফ্ল্যাটগুলোর বৈধ বরাদ্ধধারী এবং বিগত ৫০ বছর ধরে তারা বসবাস করে আসছেন। মূলত এটি তৎকালীন গৃহ সংস্থান অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় ১১৫২ ফ্ল্যাট স্কিমের আওতায় ভাড়া-খরিদ পদ্ধতিতে বিক্রি করার উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ ৫০ বছরেও তাদের কাছে এই ফ্ল্যাটগুলোর মালিকানা বিক্রি করা হয়নি।
আমার বার্তা/এমই

