
রেড সি ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ২০২৫–এর তৃতীয় দিন জেদ্দায় প্রমাণ করে দিল-নারীরা এ উৎসবে শুধু উপস্থিত নন, বরং নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আলোচনাসভা, মাস্টারক্লাস ও শিল্প–বিনিময়ের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাঁদের উপস্থিতি ছিল প্রভাবশালী।
দিনের শুরুতেই দর্শকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে মঞ্চে আসেন ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। মা-হওয়া ও ক্যারিয়ার সামলানোর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, মিস ওয়ার্ল্ড খেতাব নিয়ে তাঁর ভাবনা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের অবস্থান-সবই খোলাখুলিভাবে তুলে ধরেন তিনি। ঐশ্বরিয়ার মতে, নিরাপত্তাহীনতা কখনও তাঁর চালিকাশক্তি ছিল না; বরং সততা ও দৃঢ়তাই তাঁকে পথ দেখিয়েছে।
অন্যদিকে, আনা দে আরমাস ছিলেন পুরোপুরি বাস্তববাদী। হাভানা থেকে মাদ্রিদ হয়ে হলিউডে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার যাত্রা, ভাষার বাধা, কঠিন সময়-এসবই শেয়ার করেন তিনি। একটি চরিত্রের প্রস্তুতি, পর্যবেক্ষণ ও পরিশ্রম-এই শিল্পভিত্তিক আলোচনা শিক্ষার্থী ও তরুণ নির্মাতাদের বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করেছে।
কুইন লতিফা উৎসবে যোগ করেন প্রতিনিধিত্ব ও শিল্পে নারীর নেতৃত্বের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি। তিনি কথা বলেন সহযোগিতা এবং শিল্পে নারীর কণ্ঠ শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে-একজন নারীর সাফল্য মানে অন্য নারীর জন্য নতুন দরজা খুলে দেওয়া।
ডাকোটা জনসন ছিলেন আরও খোলামেলা। তিনি জানান, প্রযোজনা করতে গিয়ে শিল্পের কঠিন দিক, আর্থিক অনিশ্চয়তা ও জটিল সিদ্ধান্ত-সবই সামনে আসে। তাঁর মতে, সৃজনশীল নিয়ন্ত্রণ নিতে হলে ঝুঁকি নেওয়া জরুরি, আর এই কাজটাই নারীদের প্রভাব বাড়াচ্ছে।
দিনজুড়ে প্যানেল, করিডর আলাপ ও মাস্টারক্লাসে একটি বিষয় স্পষ্ট ছিল-এই নারীরা উৎসবের কথোপকথন, ভাবনা ও দিকনির্দেশনা সক্রিয়ভাবে বদলে দিচ্ছেন। তাঁদের উপস্থিতি মানে শুধু রেড কারপেট নয়; বরং শিল্পের ভেতরের বাস্তবতা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা।
রেড সি ২০২৫–এ নারীর নেতৃত্ব শুধু দৃশ্যমানই নয়, কার্যকরও। ঐশ্বরিয়ার আত্মপ্রত্যয়, আনার পরিশ্রমের গল্প, লতিফার অ্যাডভোকেসি আর ডাকোটার নির্মোহ বাস্তবতা-সব মিলিয়ে এই উৎসব হয়ে উঠেছে নারীর দৃষ্টিভঙ্গি ও শক্তির এক অনন্য উদযাপন।
‘সিনেমার প্রতি ভালোবাসা’-এই স্লোগান নিয়ে গত চার ডিসেম্বর জেদ্দায় বসেছে এই ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। উৎসবের পঞ্চম আসর এটি। চলবে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বিশ্বের নানা দেশের ১১১ সিনেমা এবারের আয়োজনে প্রদর্শিত হচ্ছে।
আমার বার্তা/এল/এমই

