জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটকের অ্যালগরিদম সিস্টেম শিশুদের অ্যাকাউন্টগুলোকে পর্নোগ্রাফি ও অন্যান্য যৌন সংশ্লিষ্ট কনটেন্ট বা বিষয়বস্তু সুপারিশ করছে। নতুন এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
গ্লোবাল উইটনেস নামে একটি মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থাগুলো সক্রিয় করার পরও ১৩ বছর বয়সি শিশুদের নামে একাধিক পরীক্ষামূলক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। এসব অ্যাকাউন্টে এমন অনুপযুক্ত কনটেন্ট সুপারিশ করা হচ্ছে যেখানে ক্লিক করলে শেষ পর্যন্ত পর্নোগ্রাফি ভিডিও দেখানো হচ্ছে, যার মধ্যে রগগগে যৌনতার ফুটেজও থাকছে।
টিকটক কর্তৃপক্ষ বরাবর জোরের সাথে বলছে, তারা শিশু বা কিশোর বয়সি ব্যবহারকারীদের সুরক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তারা আরও বলছে, কোনো সমস্যা সম্পর্কে অবহিত হওয়ার সাথে সাথে তারা দ্রুত পদক্ষেপ নেয়।
বিষয়টি যাচাই করার জন্য চলতি বছরের জুলাইয়ের শেষ দিকে গ্লোবাল উইটনেসের গবেষকরা ১৩ বছর বয়সি জাল জন্ম তারিখ দিয়ে টিকটকে চারটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করেন। অ্যাকাউন্টগুলোতে টিকটকের ‘রেস্ট্রিক্টেড মোড’ সক্রিয় করা হয়েছিল।
এটা এমন একটা ফিচার যা সক্রিয় করলে ভিডিওগুলো ফিল্টার হয়ে আসবে। কিন্তু এই ফিচারটি সক্রিয় করার সময় জন্মদিন প্রবেশের পরে বয়স যাচাই করার কোনো প্রয়োজন হয়নি। অর্থাৎ ব্যবহারকারী আসলেই শিশু কিনা তা যাচাই করা হচ্ছে না।
প্রতিবেদন মতে, এসব অ্যাকাউন্টগুলোতে ব্যবহারকারী কোনো অনুসন্ধান না করা সত্ত্বেও টিকটকের ‘আপনার পছন্দ হতে পারে’ এমন ফাংশনের মাধ্যমে যৌনতাপূর্ণ কীওয়ার্ড সুপারিশ করা হয়েছিল। এই সুপারিশ করা ভিডিওগুলোতে ক্লিক করার পর নারীদের হস্তমৈথুন, জনসমক্ষে অন্তর্বাস খোলা এবং এমনকি পর্নোগ্রাফি তথা রগগগে যৌনতার ফুটেজ দেখানো হয়েছিল।
গ্লোবাল উইটনেসের আভা লি বলেন, এই ফলাফল ছিল গবেষকদের জন্য এক ‘বিশাল ধাক্কা’। তার কথায়, ‘টিকটক কেবল শিশুদের অনুপযুক্ত কনটেন্ট-এ প্রবেশ থেকে বিরত রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে না, তারা অ্যাকাউন্ট তৈরি করার সাথে সাথেই তাদের এমন কনটেন্ট দেখতে সুপারিশ করছে।’
গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে কাজ করা গ্লোবাল উইটনেস চলতি বছরের এপ্রিল মাসে একটি প্রকল্পে কাজ করার সময় এই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল। এরপর তারা বিষয়টি নিয়ে গবেষণা চালায় সংস্থাটি। প্রতিষ্ঠানটি এরই মধ্যে তাদের অনুসন্ধানের ফলাফল টিকটককে জানিয়েছে।
আমার বার্তা/এল/এমই