বিরাজমান বিশ্ব পরিস্থিতি ও পারস্পারিক স্বার্থ বিবেচনায় সম্পর্ক স্বাভাবিক করা পথেই কি হাটছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-চীন? ২০২০ সালে পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর চীনের সঙ্গে সামরিক সংঘাতে দুই দেশের সম্পর্কে তীব্র উত্তেজনার পর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করের প্রথম বেইজিং সফরে এমনটাই আভাস মিলেছে। খবর দ্য টেলিগ্রাফ
সোমবার বেইজিংয়ে চীনের উপ-রাষ্ট্রপতি হান ঝেং-কে জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, ভারত-চীন সম্পর্কের ক্রমাগত স্বাভাবিকীকরণ পারস্পরিকভাবে লাভজনক ফলাফল আনতে পারে ও জটিল বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে উভয় পক্ষের মধ্যে মুক্ত মতবিনিময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর দ্বিদেশীয় সফরের দ্বিতীয় ও শেষ পর্যায়ে সিঙ্গাপুর থেকে বেইজিং অবতরণের পরপরই ঝেংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।মূলতঃ চীনের তিয়ানজিন শহরে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) সম্মেলনে যোগ দিতে চীন সফর করছেন জয়শঙ্কর।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘গত অক্টোবরে কাজানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের মধ্যে বৈঠকের পর থেকে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্রমাগত উন্নতি হচ্ছে। আমি নিশ্চিত যে, এই সফরে আমার আলোচনা সেই ইতিবাচক ধারা বজায় রাখবে।’
ভারত-চীন কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৭৫তম বার্ষিকীর কথা উল্লেখ করে জয়শঙ্কর বলেন, ‘কৈলাস মানস সরোবর তীর্থযাত্রা পুনরায় শুরু করার পদক্ষেপ ভারতেও ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হচ্ছে। আমাদের সম্পর্কের ক্রমাগত স্বাভাবিকীকরণ পারস্পরিকভাবে সুফল বয়ে আনতে পারে।’
‘আজ আমরা যে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছি, তা খুবই জটিল। প্রতিবেশী ও প্রধান অর্থনীতির দেশ হিসেবে, ভারত ও চীনের মধ্যে মতামত ও দৃষ্টিভঙ্গির উন্মুক্ত বিনিময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সফরের সময় আমি এই ধরনের আলোচনার জন্য অপেক্ষা করছি।-বলেন জয়শঙ্কর। চীনের এসসিও সভাপতিত্বের প্রতি ভারতের সমর্থনের কথা ভাইস প্রেসিডেন্ট হানকে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এসসিও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য চীনের বন্দর নগরী কিংদাও-এ ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সফরের তিন সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে এস জয়শঙ্করের এই সফর দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসেবেই দেখছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।
আমার বার্তা/জেএইচ